পুরস্কারের টাকা জীবন বাঁচানো শিশুর পরিবারকেই দিয়ে ফের নজির রেলকর্মী ময়ূরের

নিজস্ব প্রতিবেদন : গত ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টা নাগাদ ছোট্ট শিশুকে নিয়ে ট্রেন ধরতে প্ল্যাটফর্মে এসেছিলেন সঙ্গীতা দেবী। হঠাৎ দুর্ঘটনাবশত সঙ্গীতার হাত ছাড়িয়ে ছয় বছরের শিশু পা পিছলে রেললাইনে পড়ে যায় আর ঠিক সেই সময় উল্টোদিক থেকে দুরন্ত গতিতে এক্সপ্রেস ট্রেন ছুটে আসছিলো। ট্রেনটির ওই স্টেশনে দাঁড়ানোর কোনো কথা ছিল না, তাই চালকের পক্ষেও ট্রেন দাঁড় করানো ছিল অসম্ভব।

দৃষ্টিহীন সঙ্গীতার পক্ষেও সবটা বুঝে ওঠা‌ সম্ভব ছিল না। সেই সময় ঘটনার গুরুত্ব বুঝে ময়ূর শেলক নিজের জীবন বাজি রেখে ছুটে যান এবং শিশুটিকে উদ্ধার করেন। ময়ূরের এই সাহসিকতাপূর্ণ কাজের ভিডিও ক্লিপ মুহূর্তের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে ময়ূর বলেছেন, “ওই শিশুর সঙ্গে যে মহিলা ছিলেন তিনি দৃষ্টিহীন ছিলেন। তাই তিনি কিছু করতে পারতেন না। ওই শিশুকে দেখে রেললাইন ধরে ছুটে যাই। প্রথম একবার ভয় হয়। মনে হয় শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে আমি বিপদে পড়ে যাবো। পরে মনে হয় আমার ওকে বাঁচানো উচিত। ঘটনার পরে ওই মহিলা খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বারবার আমাকে ধন্যবাদ জানান। পরে ফোন করেছিলেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল।”

এই ঘটনার পর রেলওয়ে অফিসের কর্মকর্তারা যেমন হাততালি দিয়ে ময়ূরকে অভিবাদন জানিয়েছেন তেমন‌ই ওই ঘটনার ভিডিও শেয়ার করেছেন খোদ রেলমন্ত্রী। ময়ূরকে নিয়ে গর্ব অনুভব করে ‌ক্যাপশনে রেলমন্ত্রী লিখেছিলেন, “ময়ূর শেলকের কাজে আমরা খুবই গর্বিত। ভানগানি স্টেশনে নিজের জীবন বাজি রেখে শিশুকে বাঁচিয়ে ব্যতিক্রমী সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।”

[aaroporuntag]
এখানেই শেষ নয়, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য রেলমন্ত্রক থেকে ময়ূরকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। আর পুরস্কৃত হওয়ার কথা জানতে পেরে ময়ূর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে পুরস্কারের অর্ধেক টাকা তিনি ওই শিশুর পরিবারের হাতে তুলে দেবেন‌। তার এই সিদ্ধান্তের থেকেই তার মনের উদারতার দিকটি বোঝা যায়।