North East Hill Station : উত্তর-পূর্বের এই ৫ জায়গা, গেলে আর ফিরে আসতে মন করবে না

North East Hill Station : গরমে ঘুরতে যাওয়া মানেই পর্যটকদের প্রথম পছন্দ পাহাড়। কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ, ঝিরঝিরে বৃষ্টি, ঝি ঝি পোকা ডাক, পাহাড়ি নিস্তব্ধতা আর ধূমায়িত এক কাপ চা। পাহাড় জমে ক্ষীর। পাহাড়িয়া পর্যটকদের কাছে ঘুরতে যাওয়ার অপশন অনেক। তবে বর্তমানে মানুষজন ধরা বাধা জায়গার বাইরে একটু নতুন নতুন জায়গা খুঁজছেন। যারা এমন জায়গা খুঁজছেন, তাদের কাছে উত্তর-পূর্ব ভারতর যেন স্বর্ণখনি। অনেকেই বলে থাকেন, এই জায়গাটি দেশের রত্ন।

বললে ভুল হবে না, প্রকৃতি দেবী উত্তর-পূর্ব ভারতকে যেন নিজে হাতে সাজিয়েছেন। উজাড় করে দিয়েছেন নিজের সমস্ত আশীর্বাদ। এখানে প্রত্যেক কোনায় ছড়িয়ে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। সব ধরনের পর্যটকেরই পছন্দসই হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্ব ভারতের পর্যটন স্থলগুলি।

যে বাসনা নিয়েই আপনি ঘুরতে যান না কেন, অতৃপ্ত মনে আপনাকে উত্তরপূর্ব ভারত থেকে ফিরতে হবে না। আর আশ্চর্যজনকভাবে এখানকার জনজীবনও কাউকে বিরক্ত না করেই নিজেদের মতো জীবন যাপন করেন। উত্তর পূর্ব ভারত পর্যটকদের কাছে টানে বারবার। তবে আজ আপনাদের উত্তর পূর্ব ভারতের সেরা পাঁচটি জায়গার সন্ধান দেব। যেখানে গেলে আর ঘরে ফিরতে মন চাইবে না।

  • অরুণাচল প্রদেশের জিরো
    উত্তর পূর্ব ভারত মানেই প্রথম পছন্দে আসে অরুণাচল প্রদেশ। এ রাজ্যের কোথায় ঘুরবেন আর কোথায় ঘুরবেন না তা ঠিক করা কষ্টকর। কোনও জায়গা বাদ দিতে মন চাইবে না। তবে অরুণাচল প্রদেশ গেলে জিরো থেকে ঘুরে আসতে ভুলবেন না। নামে জিরো হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখানে ১০০ শতাংশ। ইটানগর থেকে জিরো-তে যাওয়ার গাড়ি পাবেন। সেখানে গেলে দেখা হবে আপতনি আদিবাসীদের সঙ্গে। এই গ্রামের ঘন অরণ্য, বাঁশ বাগান এবং ধানের খেত আমাদের দেশের আর পাঁচটা গ্রামের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। খাবার কিংবা পানীয়ের জন্য গ্রামেরই কোনও পরিবারের কাছে অনুরোধ জানাতে পারেন। অর্থের বিনিময়ে দারুণ সব পাহাড়ি পদ জিভকে শান্তি দেবে। জিরোর সংগীত উৎসব বিশ্ববিখ্যাত। জিরো ভ্রমণের সেরা সময় মার্চ থেকে অক্টোবর মাস।

 

  • অসমের হাফলং
    বরাক নদীর উপত্যকার এই পাহাড়ি শহরের রয়েছে অসংখ্য অনন্য প্রজাতির অর্কিড, নীল পাহাড় এবং বেশ কয়েকটি প্রাচীন উপজাতির বাড়ি। হাফলং অসমের একমাত্র পাহাড়ি স্টেশন। অসমের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থল হল হাফলং পাহাড়। গরমে এখানকার আবহাওয়া অত্যন্ত মনোরম থাকে। হাফলং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে যেন স্বর্গরাজ্য। বোরাইল পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত বিখ্যাত হাফলং হ্রদ, চমৎকার জলপ্রপাত, রহস্যময় জাটিঙ্কা গ্রামের পাখি দর্শন, মাইবং সংস্কৃতি, মনোরম আবহাওয়া এবং ঐতিহাসিকভাবে ভবনগুলি উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম সেরা স্থান।

 

  • মণিপুরের চান্দেল
    ভারত ও মায়ানমারের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর কৌশলগত অবস্থানের কারণে, চান্দেলকে ‘মায়ানমারের প্রবেশদ্বার’ও বলা হয়। ভারতের রত্ননগরী মণিপুরের চান্দেল একটি ছোটো পাহাড়ি গ্রাম। ২০ টিরও বেশি প্রাচীন উপজাতির আবাসস্থল এই গ্রামটি। মনোরম পাহাড়ি দৃশ্য ছাড়াও, উপজাতিদেরর লোভনীয় শিল্প ফর্ম, তাদের অনন্য নৃত্য-গীত, খাবার সহ অভিনব অনেক কিছুই উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।

 

  • সিকিমের পেলিং
    সুউচ্চ পর্বত, সবুজ বনানী, পাহাড়ি নদী, ঠান্ডা আবহাওয়া, সাদা তুষার আর পরিষ্কার স্বচ্ছ আকাশের নীচে সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীকে নিয়ে বেড়াতে অসাধারণ লাগে। তারই সেরা ঠিকানা পেলিং। বছরের যে কোনও সময়েই সিকিমের পেলিং ঘোরার একটা আলাদা রোমাঞ্চ আছে। পেলিং এমনিতে বেশ শান্তশিষ্ট একটি শহর। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন বা বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে পেলিং যাওয়ার গাড়ি পাওয়া যায়। পেলিং থেকে কাঞ্জনজঙ্ঘার সৌন্দর্য অসাধারণ। কাঞ্চনজঙ্ঘা জলপ্রপাত, খেচিপেরি হ্রদ, সিংসোর সেতু ঘুরে আসুন।

 

  • মেঘালয়ের শিলং
    চ্যের স্কটল্যান্ড’ নামে জনপ্রিয়, শিলং হল মেঘালয়ের রাজধানী, ভারতের অন্যতম সুন্দর উত্তর-পূর্ব রাজ্য। হিল স্টেশনটি নিঃসন্দেহে প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য একটি স্বর্গ। তাছাড়া, প্রকৃতির নিজস্ব বিস্ময় – লিভিং রুট ব্রিজ, এবং এশিয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার গ্রাম এই হিল স্টেশনটিকে সারা বিশ্বের ভ্রমণকারীদের মধ্যে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে। অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক দৃশ্য, দুর্দান্ত জলপ্রপাত, স্ফটিক স্বচ্ছ জলের হ্রদ এবং রঙিন বাজারের জন্য জায়গাটি পর্যটকদের বারবার কাছে টানে।