আবারও ভারত পাকিস্তান বিতর্ক চরমে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর গলায় হুশিয়ারির সুর শোনা যায় যে পাক অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর ভারতেরই আওতায়। ভারত এখন সঠিক সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে, সময় আসলে তা নিজেদের দখলে করবে। সরকার সেই লক্ষ পূরণেই ক্রমাগত কাজ করে চলেছে বলেও পাকিস্তানকে আরও অস্বস্তিতে ফেলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই এই হুঁশিয়ারি কানে আসার পর থেকেই পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে পাকিস্তানের। পাক সেনা ও সরকার এখন নড়েচড়ে বসেছে তাদের দখলকৃত ঘরকে রক্ষা করতে।
নতুন করে বহু বছর পর আবার শ্রীনগরের কাছে PoK-তে পাক বায়ুসেনার দুই ঘাঁটি খোলার পথে পা বাড়িয়েছে। কোটলি ও রাওয়ালকোট বায়ুসেনা ঘাঁটি দুটির দূরত্ব শ্রীনগর থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার। ফলে ভারতের জন্য এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কপালে। অন্যদিকে দিল্লিও সতর্ক রয়েছে। সম্প্রতি বোলান প্রদেশে বালোচ লিবারেশন আর্মির হাইজ্যাক এর মুখে পড়ে ১৫৫ জন যাত্রী ও পাক সেনা বহনকারী একটি ট্রেন। ওই হাইজ্যাকে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যুর খবর সামনে আসে। তারপরই এই ঘটনার জন্য পাকিস্তানের তরফে ভারতকে দায়ী করা হয়।
আরও পড়ুন: Tunnel: চার কিলোমিটার দীর্ঘ সুরঙ্গের কাজ শেষের পথে! ২১ মিটার প্রশস্ত রাস্তা জুড়লো গুরুগ্রাম-ভদোদরা
অভিযোগ ওঠে ভারত থেকে বালোচ বিদ্রোহিদের এই ঘটনার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। ভারত সেই অভিযোগ কার্যত অস্বীকার করে। বালোচ বিদ্রোহিদের তরফে যে অভিযোগ তাতে বলা হচ্ছে পাকিস্তান সরকার নাকি তাদের খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বেআইনিভাবে দখল করতে চায়। যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে তারা। যার কারণেই পাক সেনার অভ্যন্তরে আঘাত এনে তারা স্পষ্ট করে দিতে চাইছে পাকিস্তানের বেআইনিভাবে হস্তক্ষেপ বালোচরা মেনে নেবে না। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের তরফে জানানো হয়েছে, বালোচ বিদ্রোহিদের এই কড়া বার্তাকে মোটেই সহজভাবে নিচ্ছে না পাক সেনা।
বালোচিস্তানের শামসিতে সেনাঘাঁটির শক্তি বাড়িয়ে আরও জোরদার করা হচ্ছে। কোটলি এয়ার বেস পড়ে পাক সেনার ২৩ ডিভিশনের আওতায়। ওই ঘাঁটিকে আটোসাটো করতে কম করে ১০০ এয়ার ডিফেন্স বাহিনী পাকিস্তানের অন্যান্য প্রদেশ থেকে কোটলিতে উড়িয়ে আনা হয়েছে। অপরদিকে ১২ ডিভিশনের আওতায় পড়ে রাওয়ালকোট এয়ারবেস। এই দুটি ঘাঁটি খোলা ছিল বহু বছর ধরে। সুত্র মারফত জানা গিয়েছে, শামসিতে ৪০৩ স্কোয়াড্রন সামরিক হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
সেনা ও সরঞ্জামে জোর দেওয়ার পাশাপাশি ঘাঁটির রেডার নেটওয়ার্ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা হচ্ছে। অন্যদিকে সিন্দের জাকোদাবাদের কাছে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে একটি নতুন ক্যান্টনমেন্টও গড়ে উঠছে পাক সেনার তরফে। পাক সরকার যার জন্য ৭০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে ফেলেছে। বালোচিস্তানের নাসিরাবাদে। তবে এবার ভারতও সতর্ক হয়েছে LoC-র এতো কাছাকাছি পাক সেনার তৎপরতা বাড়ানোয়।