মেসেজ ফাঁস করার হুঁশিয়ারি, বন সহায়ক নিয়োগ দুর্নীতিতে মমতাকে চ্যালেঞ্জ রাজীবের

নিজস্ব প্রতিবেদন : বন সহায়ক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে, বুধবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারে নাম না করে এমনই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দাগেন রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এর পাল্টা হিসেবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নাম করেই মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, কিভাবে কোথায় থেকে সুপারিশ এসেছিল তার সব নথি, মেসেজ এবং কথাবার্তার রেকর্ড তার কাছে আছে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগের পর এই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়ার গুড়াপের বিজেপির যোগদান মেলা থেকে কার্যত মেসেজ ফাঁস করার মত হুঁশিয়ারি ছুঁড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শাসকদলের বিরুদ্ধে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা।

গুড়াপে বিজেপিতে যোগদান মেলা থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উনি আজকে বলেছেন বন সহায়ক পদে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। তদন্ত করবেন। এই নিয়োগ আমি নিরপেক্ষভাবে বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। ৮ই অক্টোবর সকাল দশটার সময় আমি আপনাকে মেসেজ করেছিলাম। মেসেজে জানিয়ে ছিলাম, ‘বীরভূমের কোন এক বড় নেতা আমাকে ধ’মকি দিয়ে বলছেন বন সহায়কের সব চাকরি আমাকে দিতে হবে।’ আপনি তার পাল্টা আমায় ফোন করে বলেছিলেন, সব জেলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের কিছু কিছু করে কোটায় দিয়ে দাও।”

এর পরেই তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, “আমাকে বলছেন কারসাজি করেছে। এতদিন মুখ খুলিনি। আপনার কথার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুলতে বাধ্য হলাম। আমার কাছে সেই মেসেজের কপি আছে। ৮ই অক্টোবর ৯টা ৫৮ আপনার সাথে আমার কথা হয়েছিল। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আপনি জেনে রাখবেন আমার কাছে সমস্ত কপি আছে কোথায় কোথায় থেকে সুপারিশ এসেছে। আপনার কোন নেতা মন্ত্রীরা সুপারিশ দিয়েছে। কোন বিধায়ক সুপারিশ দিয়েছে। কোন উচ্চ নেতৃত্ব সুপারিশ দিয়েছে। কালিঘাট থেকে কি সুপারিশ এসেছে। কার তালিকা এসেছে, সব আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছি। সব আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছি। কেঁচো খুঁড়তে খুঁড়তে আপনি কেউটে সাপ বের করছেন।”

এখানেই শেষ নয়, এরপর তিনি বলেন, “আমার কাছে সব তথ্য রয়েছে, কারা কারা সুপারিশ করেছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিচ্ছি আপনি এখনো আলিপুরদুয়ারে আছেন। আলিপুরদুয়ারের বর্তমান জেলা সভাপতির সুপারিশপত্রও আমার কাছে রয়েছে। আপনি সন্ধাবেলায় তার কাছ থেকে জেনে নিন যে তার সুপারিশ কি ছিল। আপনার যদি এতই তদন্ত করার ইচ্ছে, দরকার নেই তদন্ত করার। পারলে বন সহায়কের প্যানেলটা বাতিল করে দিন। তাহলেই বুঝে যাবেন দুধ কা দুধ, পানি কা পানি।”

এর পাশাপাশি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, “বিগত দিনে যত যত চুক্তি ভিত্তিক চাকরি হয়েছে ক্ষমতা থাকলে সব ক্ষেত্রে তদন্ত করে দেখান। সেইসব চাকরির তালিকা কোথায় থেকে এসেছে, কিভাবে নিয়োগ হয়েছে, কারা কারা চাকরি পেয়েছে তার কাগজও আমার কাছে মজুত আছে। কিভাবে আপনি দিয়েছিলেন, কোথা কোথা থেকে সুপারিশ এসেছে, কত জায়গা থেকে সুপারিশ এসেছে, সমস্ত কপি আমি দিয়ে দেবো আপনাকে। করুন তদন্ত। আমি যদি মুখ খুলি তাহলে শুধু বট গাছের পাতা নয়, বটগাছও নড়ে যেতে পারে, সমুদ্রও আতাল পাতাল হয়ে যেতে পারে।”