2016 SSC Scam: এক-দু’রকম নয়, এই ১২ রকমভাবে হয়েছিল নিয়োগে বেনিয়ম! দেখিয়ে দিল আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদন : ২০১৬ সালের এসএসসির (2016 SSC Scam) মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশের পুরো প্যানেল বাতিল করার ঘোষণা করেছে আদালত। আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার চাকুরীজীবী। আদালতের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন চারদিকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অধিকাংশ মানুষেরা আদালতের এই রায়কে ঐতিহাসিক রায় বলে জানাচ্ছেন। আবার অনেকেই রয়েছেন যারা মনে করছেন, কিছু অযোগ্য প্রার্থীদের জন্য সবাইকে শাস্তি পেতে হলো।

কিন্তু প্রশ্ন হল কেন আদালত এত বড় রায় দিতে বাধ্য হল? এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ এবং সেই সকল কারণ আদালতের তরফ থেকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালতের তরফ থেকে উল্লেখ করা সেই সকল কারণ থেকেই স্পষ্ট, এক দু’রকম ভাবে নয়, একেবারে ১২ রকমের অনিয়ম হয়েছে ২০১৬ সালের এসএসসির নিয়োগের ক্ষেত্রে।

১) ২০১৬ সালের এসএসসির নিয়োগের ওএমআর শিট স্ক্যান করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নাইসাকে। কিন্তু নিয়ম বলছে এটি একেবারেই অনুচিত।

২) ওএমআর শিট স্ক্যান করার দায়িত্ব নাইসাকে দেওয়া হলেও আবার তারা তা নিজেদের হাতে রাখেনি এবং সেই সকল ওএমআর শিট স্ক্যান করার দায়িত্ব তারা দিয়েছিল ডেটা স্ক্যানটেক নামে একটি বেসরকারি সংস্থাকে।

৩) আবার ওএমআর শিট স্ক্যান করা হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসে। কিন্তু সেখানে ডেটা স্ক্যানটেক নামের বেসরকারি সংস্থাকে ওএমআর শিট স্ক্যান করতে দেওয়া হয়নি। বদলে নিজেরাই স্ক্যান করেছিল ওএমআর শিট।

৪) পরীক্ষার্থীরা যে সকল উত্তরপত্রে উত্তর দিয়েছিলেন সেই সকল উত্তরপত্রের হার্ডডিস্ক এসএসসি নষ্ট করে ফেলে।

৫) নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই যখন তদন্ত করে তখন তারা কোনরকম স্ক্যান কপি পায়নি। এসএসসি যে সকল ওএমআর শিট স্ক্যান করেছিল তার কোন প্রমাণ তারা রাখেনি নিজেদের সার্ভারে।

৬) আবার ওএমআর সিটের স্ক্যান কপি সার্ভারে না রেখেই সমস্ত হার্ড কপি নষ্ট করে দেয় এসএসসি।

৭) শূন্য পদের থেকে অতিরিক্ত আসন তৈরি করে এসএসসি অতিরিক্ত নিয়োগ করেছিল।

৮) প্যানেল বহির্ভূত নিয়োগ করেছিল এসএসসি।

৯) আবার প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ না করে নিয়োগ করেছিল এসএসসি।

১০) নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা তালিকাকে তোয়াক্কা করা হয়নি। অনেকেই রয়েছেন যারা মেধা তালিকার শেষের দিকে থাকলেও তাদের আগেভাগে চাকরি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

১১) এমন অনেক প্রার্থী রয়েছেন যারা সাদা খাতা জমা দিয়েছিলেন কিন্তু তাদের চাকরি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন 👉 SSC Salary Return: সবাইকে ফেরত দিতে হবে না বেতন, চাকরি হারানোদের এই ৩ শ্রেণীকে ফেরৎ দিতে হবে টাকা

১২) বেআইনিভাবে যারা নিযুক্ত হয়েছেন তাদের বাঁচানোর জন্য এসএসসির তরফ থেকে অতিরিক্ত পদ বাড়ানোর জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল।

এই ১২ রকমের অনিয়ম মানার কারণেই আদালতের তরফ থেকে এমন বড় রায় দিতে বাধ্য হয়। তবে আদালত এত সহজে এমন রায় দেয়নি। এমন রায় দেওয়ার আগে আদালতের তরফ থেকে বারবার বলা হয়েছিল, বেআইনিভাবে নিযুক্তদের চিহ্নিত করতে। কিন্তু পর্ষদ অথবা এসএসসি সেই কাজ করেনি। আবার প্রাপ্ত নম্বর সহ মেধাতালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তাও করেনি।