মোবাইলের নেশায় বুঁদ সন্তান, দূর করার সহজ উপায়

নিজস্ব প্রতিবেদন : বর্তমান সময়ে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদি। এই সকল জিনিসপত্র পৌঁছে যাওয়ার ফলে এগুলির প্রতি যেমন আসক্তি বাড়ছে বড়দের ঠিক তেমনি আসক্তি বাড়ছে ছোটদেরও। এমনকি দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা বাড়ির সন্তানরা মোবাইল হাতে মত্ত রয়েছে।

দীর্ঘক্ষণ ধরে মোবাইল হাতে মত্ত থাকার ফলে সন্তানদের মানসিক থেকে শারীরিক বিকাশ আটকে যায়। এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি ঘুমের ক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি পরিস্থিতি এমন দিকে চলে যায় যে নিয়মিত তাদের কাউন্সিলিং করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় সন্তানদের জেদ এবং অন্যান্য চাহিদা পূরণের জন্য বাবা-মাদের সন্তানদের হাতে মোবাইল ধরিয়ে দিতে। এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এসবের ফলে ঘুম কমে যাওয়ার পাশাপাশি মনে রাখার ক্ষমতা, ভাবনার সৃষ্টি, চিন্তা করার সামর্থ্য ইত্যাদি লোপ পায়। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও কি পরিমাণ ক্ষতি হয় তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।

এখন প্রশ্ন হল এই আসক্তি থেকে কিভাবে তাদের বের করা যেতে পারে? শিশুদের মোবাইলের প্রতি আসক্তি দূর করা খুব সহজ কাজ নয়। তবে নজর রাখতে হবে তার ঝোঁক কোন দিকে। সেই ঝোঁকের উপর নজর রেখে মোবাইলের সমান জনপ্রিয় জিনিস তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। যেমন ছবি আঁকা, গান গাওয়া বা কোনও বাদ্যযন্ত্রের প্রতি খুদের কৌতূহল থাকলে সেই আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিতে হবে।

পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটার কোডিং ল্যাঙ্গুয়েজ শেখানো, বিভিন্ন রহস্য ও রোমাঞ্চকর গল্পের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি করা ইত্যাদির মাধ্যমেও মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমানো যেতে পারে। ছেলেমেয়েদের প্রতি সময় বেশি দিতে হবে মোবাইল, টিভি এসব দূরে সরিয়ে। তবে যদি দেখা যায় যে কোন সন্তান স্মার্টফোন ব্যবহার করেও প্রতিদিনের কার্যকারিতা সঠিকভাবে পালন করছে তাহলে দিনে ১-২ ঘন্টা মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

খেলাধুলার প্রতি যে করেই হোক ঝোঁক বাড়াতে হবে শিশুদের। প্রয়োজন পড়লে সপ্তাহে একদিন পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে। এছাড়াও রাতে ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে অথবা ঘুম থেকে ওঠার প্রথম এক দুই ঘণ্টা কোনোভাবেই শিশুর হাতে মোবাইল দিলে হবে না।