ফের অনুব্রত গড়ে তৃণমূলের অন্দরে কোন্দল, প্রকাশ্যে ক্ষোভ পঞ্চায়েত প্রধানের

চন্দন কর্মকার : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতির অন্যতম অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূল অন্দরের কোন্দল। এক নেতা মুখ খুলতেই দেখা যাচ্ছে তার পিছনে পিছনে আরও দুজন দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। সে শুভেন্দু অধিকারী বা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত নেতা হোক অথবা নিচু স্তরের কর্মীরা। ঠিক এমনই দলের অন্দরে কোন দল এবার খোদ অনুব্রত গড়ে।

সোমবার ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কাজল সাহা দলের ব্লক সভাপতি তথা বিধায়ক অভিজিৎ রায়ের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেন। আর তার ইস্তফা দেওয়ার সাথে সাথেই জল্পনা শুরু হয় বিজেপির হাত ধরা নিয়ে। ঠিক একই ভাবে আরও এক জল্পনা সাঁইথিয়া ব্লকে।

সোমবার সাঁইথিয়ায় বঙ্গধ্বনি যাত্রার প্রচারে বনগ্রাম পঞ্চায়েতে বের হন সাঁইথিয়া ব্লক সভাপতি সাবের আলী। দলের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ওই যাত্রায় দেখা গেল না ওই পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েতের প্রধান তুষার কান্তি মন্ডল। কিন্তু দলের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন পঞ্চায়েত প্রধান তুষার কান্তি মন্ডল বঙ্গধ্বনি যাত্রায় শামিল হলেন না তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন! প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা।

কেন তুষার কান্তি মন্ডল তৃণমূলের এই কর্মসূচিতে শামিল হলেন না সেই প্রশ্ন তাকে করা হলে তিনি ব্লক সভাপতি সাবের আলীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে ক্ষোভ উগরে দেয়। তুষার কান্তি মন্ডল জানান, “ব্লক সভাপতির গ্রুপ বাজি, সাঁইথিয়া ব্লকের কোন কমিটি নেই, দু’বছর থেকে পঞ্চায়েত সমিতি বনগ্রাম পঞ্চায়েতকে কোন কাজ দেয়নি। বহু নোংরামো আছে ব্লক সভাপতির।” যদিও তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৭ তারিখের বঙ্গধ্বনি যাত্রায় তিনি এবং তার পঞ্চায়েতের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। জানা গিয়েছে সে দিনের বঙ্গধ্বনি যাত্রায় হাজির থাকবেন বিধায়িকা নিলাবতি সাহা।

পাশাপাশি তুষার কান্তি মণ্ডলের আরও অভিযোগ, “ব্লক সভাপতি সাবের আলী আমাদের ইউজ এন্ড থ্রো পেনের মত ব্যবহার করে থাকেন। আমরা রাজনীতি করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলকে দেখে।”

যদিও ঘটনার বিষয়ে সাঁইথিয়া ব্লকের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সাবের আলী দাবি করেছেন, “প্রধানকে ফোন করা হয়েছিল, তিনি জানিয়েছেন অসুস্থ আছেন। আজ আমি ফোন করেছিলাম কিন্তু ফোন ধরেননি। আমি উনার সাথে কথা বলবো। উনাকে অবশ্যই সুযোগ দেওয়া হবে। তবে এই ঘটনা ভোটের কোনো ক্ষতি করবে না। পাশাপাশি এই ঘটনার কথা আমি জেলার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। তারা যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে।”

সাঁইথিয়া ব্লকের ব্লক সভাপতি সাবের আলী বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের অন্দরেই কোন্দল কোন ভাবেই ভোটে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি করলেও রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মধ্যে এমন কোন্দল শাসক দলকে অবশ্যই অস্বস্তিতে ফেলবে।”