Oldest Pyramid in the World: মরুদেশকে ছাপিয়ে এগিয়ে গেল সেই দেশের ইতিহাস! পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন পিরামিডের অস্তিত্ব কোথায় মিলল জানেন?

Oldest Pyramid in the World: মিশর বলতেই প্রথমেই চোখে যা ভেসে ওঠে তা হল বালির ওপর থরেথরে সাজানো পিরামিড। বইয়ের পাতায় উঁকি দিলে বোঝা যাবে কত শত ইতিহাস এই পিরামিডের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম একটি নিদর্শন হল মিশরের পিরামিড। প্রাচীন মিশরকে শাসন করতেন ফারাওরা। মূলত তাদেরকে সমাধি দেওয়ার জন্যই পিরামিড নির্মাণ করা হতো। মিশরে ছোটবড় প্রায় ৭৫টি পিরামিড অবস্থান করছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং আকর্ষনীয় হচ্ছে গিজা’র পিরামিড যা খুফুর পিরামিড নামেও বিখ্যাত।

জানেন কি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন পিরামিড কোথায় অবস্থিত? পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম মিশরের পিরামিড প্রায় পাঁচ হাজার বছর পুরোনো। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন পিরামিড তৈরি হয়নি মিশরে। মিশরীয়দের হারিয়ে সেই ইতিহাসের আলোয় আলোকিত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া। সেখানে মাটির নীচে শায়িত রয়েছে ২৫ হাজার বছরের ইতিহাস। যা মিশরের পিরামিড এর সাথে কোনো তুলনাই চলে না। মিশরের মানুষের একটা প্রচলিত ধারনা আছে যে কোনও এক জাদুবলে পাথরে ওজন শূন্য করে ফেলে সেগুলি পরপর সাজিয়ে পিরামিড নির্মাণ করা হয়েছিলো। যা মনুষ্যসৃষ্ট নয়।

আরও পড়ুন: SSC Recruitment: বাবার চাকরি ছেলেকে দিতে রাজি নয় SSC! আদালতের বড় নির্দেশ

ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভায় অবস্থিত এক পাহাড়ি অঞ্চল, তার মাঝেই এদিক ওদিক তাকাতেই দেখা মেলে অসংখ্য পাথর। পাহাড়ি এই অঞ্চলে মূলত প্রাচীন জনজাতিদের বসবাস। গোটাটাই রহস্যের চাদরে মোড়া। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, এখানে মাটির নীচে লুকিয়ে রয়েছে এক বিশাল আকৃতির পিরামিড। যার নাম ‘গুনুং পাডাং’। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ধরনের স্থাপত্যকে ‘পান্ডেন বেরুনডাক’ নামেই ডাকেন। এই নামের অর্থ ধাপে ধাপে ওঠা পিরামিড। এ অঞ্চলে প্রত্নতত্ত্ববিদদের পা পড়েছে মাত্র এক দশক আগে। তাই উদঘাটন হয়েছে রহস্য। তার আগে একে একটি পাহাড় বলেই জানতেন সে দেশের মানুষ।

বিশেষজ্ঞেরা তথ্য অনুযায়ী, মিশরের পিরামিড, এমনকি স্টোনহেঞ্জের থেকেও পুরোনো এই পিরামিড সম্ভবত মানুষের তৈরি সবচেয়ে প্রাচীন মেগালিথিক স্থাপত্য। যদিও সেই ধারনা নিয়ে এখনও কাটাছেঁড়া চলছে। জানা গিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল প্রত্নতত্ত্ববিদ, ভূতত্ত্ববিদ, ভূপদার্থবিদদের একটি বিশেষ দল অভিযান চালায় এই অঞ্চলে। দীর্ঘ গবেষণা ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের পরে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ইন্দোনেশিয়ার ‘ন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন এজেন্সি’।

ইন্দোনেশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেসের ড্যানি হিলম্যান নাতাভিদজাজা এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন। ড্যানি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেছিলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের পরে জানা গিয়েছে আগ্নেয় পাথরের তৈরি পাহাড়ের গা কেটে এই স্থাপত্য তৈরি হয়েছিল। রেডিয়োকার্বন ডেটিংয়ের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, তুষার যুগের শেষে তৈরি হয়েছিল এই স্থাপত্য। ড্যানি আরও জানান, গুনুং পাডাংয়ের গঠন বেশ জটিল এবং একই সঙ্গে অভিজাত। এর সবচেয়ে গভীর অংশ মাটির থেকে ৩০ মিটার নীচে। ড্যানির দাবি, পিরামিডের কেন্দ্রস্থলটি খ্রিস্টপূর্ব ২৫ হাজার থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১৪ হাজার বছরের মধ্যে তৈরি।

একটি নতুন গবেষণাপত্রে গবেষকদের একটি দুর্দান্ত দাবি প্রকাশ পেয়েছে। তাদের মতে, ইন্দোনেশিয়ার গুনুং পাডাং পিরামিড খ্রিস্টের জন্মের আনুমানিক ১৬ হাজার থেকে ২৭ হাজার বছর আগে নির্মিত হলেও এই নির্মাণটি মনুষ্যসৃষ্ট কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। সাদার্ন কানেকটিকাট স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রত্নতাত্ত্বিক বিল ফারলি জানিয়েছেন, গুনুং পাডাং থেকে প্রাপ্ত ২৭,০০০ বছরের পুরনো মাটির নমুনা থেকে কাঠকয়লা বা হাড়ের টুকরোর মতো কোনও উপাদান উদ্ধার হয়নি। কাজেই এই ধরনের উপাদান সেখানে মানুষের কার্যকলাপের অস্তিত্ব প্রমাণে সহায়তা করত বলে জানান তিনি।