Tourist Spot: নববর্ষের ছুটিতে নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে বেরিয়ে আসুন সবুজে ঘেরা জয়পুর থেকে! কলকাতা থেকে দূরত্ব মাত্র চার ঘণ্টা

ছুটির দিনে ভ্রমণ পিপাসুদের মন আর ঘরে টেকে না। কিন্তু এপ্রিলের শুরুতেই মাথার ওপর সূর্যি মামা এমন দাপট দেখাচ্ছে যে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোতে মন চাইছে না। আর একদিন পরেই বাঙালির প্রাণের নববর্ষ। আবার বর্ষ বরনের আগের দিনেই অম্বেডকর জয়ন্তী। তাই হাতে বেশ কয়েকটা ছুটি জমা রয়েছে। এই ছুটির মরসুমে মনকে একটু শান্ত বরং ঘুরে আসুন নিরিবিলি অরণ্যভূমের কোল থেকে।

চারিদিক গাছপালায় ঘেরা থাকলেও তাপ যে গায়ে লাগবে না তা কিন্তু নয়। তবে প্রকৃতির কোলে দুইদিন কাটাতে চাইলে ছুটিতে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়াই যায় জয়পুরের উদ্দেশ্য। তবে গোলাপি শহরের কথা বলছি না কিন্তু, কলকাতা থেকে মাত্র চার ঘণ্টার দূরত্বে গাড়িতে চেপে পৌঁছে যেতে পারেন সেখানে। শান্ত মনোরম সবুজের মেলায় গোটা দিনটা কাটিয়ে দিতে পারবেন। বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর বললেই মাথায় সবার আগে আসে টেরাকোটার ছবি।

আরও পড়ুন: Jaya Roy: মুম্বই হামলার ‘মাস্টার মাইন্ড’ রানাকে এবার প্রশ্নবানে ঘায়েল করবেন বাংলার মেয়ে! কী পরিচয় তার?

তবে বহু মানুষ এই জায়গার নাম শুনলেও খানিক অগোচরেই রয়ে গিয়েছে জয়পুরের বিশাল জঙ্গল। অথচ জয়পুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কিন্ত অন্য কোনও নামকরা জায়গার থেকে কিছু কম নয়। ক্যামেরা হাতে পর্যটক বেরিয়েই পড়তে পারেন নানান পাখির ছবি সংগ্রহ করতে। দুধরাজ থেকে ফিঙে, এশিয়ান ওপেনবিল, স্যান্ড লার্ক-সহ নানান পাখির আনাগোনা এই অরণ্যের বুকে।

এছাড়া শাল, মহুয়া, সেগুন, বেহেড়া এমন করে পথের দুধারে দাঁড়িয়ে আছে, দেখে যেন মনে হয় পর্যটকদের জঙ্গলে আহ্বান জানাচ্ছে। আবার শালবনের বুক চিরে কালো পিচের মসৃণ রাস্তা এগিয়ে গিয়েছে বিষ্ণুপুরের দিকে। তপ্ত রোদে চারিদিক হেঁটে না দেখতে মন চাইলে, গাড়িতে বসেই সবুজের সমারোহ উপভোগ করতে পারবেন।দুপুরের তপ্ত রোদে গা ভেজাতে ইচ্ছা না করলে, একটু বিকেলের দিকে বরং জাতীয় সড়ককে বিদায় জানিয়ে জঙ্গলের পথে পাড়ি দিন। মোরামের রাস্তা আপনাকে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাবে গ্রামে।

তবে জয়পুরের জঙ্গলে হাতির আনাগোনা কিন্তু কম নয়। মাঝেসাঝেই খাবারের সন্ধানে বেরোয় হাতির দল। তাই সুরক্ষিত থাকতে সতর্ক থাকাও কিন্ত জরুরি। বিশেষ করে এই বৈশাখের তীব্র গরমে সাপখোপের উপদ্রবও কিন্তু লেগেই থাকে। সেক্ষেত্রে জঙ্গলের পথ ধরে নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার ইচ্ছা থাকলে, চোখ কান খোলা রেখেই এগিয়ে চলা ভাল।

এছাড়াও জয়পুরের গভীর জঙ্গলে হরিণ, বুনো শূয়োর-সহ নানান প্রাণীর বসবাস। যদিও হরিণের দেখা পেতে ভাগ্য দরকার। জয়পুরের জঙ্গলে গেলে গাছগাছালির ভিড়েই নতুন এক অভিজ্ঞতা করতে পারবেন। দেখা মিলবে একটি পরিত্যক্ত এয়ারফিল্ড বা বিমানঘাঁটির। ওই জায়গাটির অপর নাম বাসুদেবপুর চাতাল। সময় থাকলে দেখে আসতে পারেন। লোকমুখে শোনা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি নাকি ব্যবহার করা হত।

কোথায় কী ঘুরে দেখতে তা তো সব প্ল্যান প্রোগ্রাম হয়েই গেল। এখন কি ভাবছেন এই দুটো দিন থাকবেন কোথায়?
জয়পুর জঙ্গল যেখান থেকে শুরু হচ্ছে সেখানে বেশ কিছু বিলাসবহুল রিসর্ট চোখে পড়বে। অন্যদিকে বিষ্ণপুরেও রয়েছে নানান দামের হোটেল। তাই এই গরমের মরসুমে আরামে হোটেলে বিশ্রাম নিয়ে মনের মতো খাওয়া দাওয়া করতে পারবেন।

গাড়ি ছাড়াও অন্য কোন পথে জয়পুর জঙ্গলে পৌঁছাতে পারবেন জেনে নিন।
সড়কপথে কলকাতা থেকে জয়পুর অরণ্যের দূরত্ব ১২৮ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে ডানকুনি, আরামবাগ হয়ে পৌঁছোতে অন্তত চার-পাঁচ ঘন্টা লাগবে। ট্রেনে যেতে হলে পৌঁছে যান বিষ্ণুপুর স্টেশন। সেখান থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরত্বে জয়পুর জঙ্গল অবস্থিত।