লম্বা লাইনে দীর্ঘ সময় আর অপেক্ষা করতে হবে না যাত্রীদের! টিকিট কাউন্টারের জায়গা নিল এমইউটিএস

নিত্য যাত্রীদের প্রতিদিনের যাতায়াতের ভরসাযোগ্য পরিবহণ ব্যবস্থা হল রেল। তবে রোজের টিকিট কাটা যাত্রীদের কাছে হয় বিরাট ঝঞ্ঝাটের। কারণ টিকিট কাউন্টারে পড়ে মস্ত বড় লাইন। আর তখন একদিকে ট্রেন আসার ঘোষণা আর অন্যদিকে চাপা সেই ভিড় এই দুইয়ের মাঝে পড়ে যেন মাথা কাজ করেনা যাত্রীদের। অবশেষে যাত্রীদের স্বস্তি ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে অবসান হতে চলেছে সেই দুশ্চিন্তার। কীভাবে?

বৃহস্পতিবার সরকারি নিয়মে আসানসোল স্টেশন থেকে শুরু হয়ে গেলো ‘এমইউটিএস’ বা যাকে বলে মোবাইল আনরিজ়ার্ভড টিকিটিং সিস্টেম। রেল দপ্তরের তরফে দাবি করা হয়েছে, শুধু রেলের আধুনিকীকরণই হবে এমনটা নয়, একই সঙ্গে যাত্রীদের অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এমইউটিএস এর সুবিধার প্রসঙ্গে আসানসোল স্টেশনের চিফ ইনস্পেক্টর অফ টিকিট বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এর তরফে উত্তর দেওয়া হয়েছে, ‘এটা এক ধরনের যাত্রীবান্ধব টিকিট পরিষেবা। যদি কোনও যাত্রী স্টেশনে গিয়ে দেখেন কাউন্টারে লম্বা লাইন। আর শুনতে পায় ট্রেন আসার ঘোষণা।

আরও পড়ুন: পর্যটন শিল্পের মুকুটে জুড়লো নয়া পালক! ‘সাদা পাহাড়’ এর কোলে ঠাঁই পেতে যেতে হবে এখানে….

সেই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে ওই যাত্রী যে গেট দিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করবেন, সেখানে ধারে কাছে থাকা টিকিট বুকিং কাউন্টারের সামনে থাকবেন টিকিট চেকার। তার সামনে থাকবে একটি যন্ত্র। যাত্রীর গন্তব্য অনুযায়ী তার টিকিটের ভাড়া দিলে চেকার তাকে একটি প্রিন্টেড টিকিট দিয়ে দেবে। ফলে তাকে আর ভিড় লাইনে অপেক্ষা না করেই নির্দিষ্ট ট্রেনে করে রওনা দিতে পারবেন। এই উদ্যোগ নেওয়ার পরেই শুক্রবার আসানসোল স্টেশনে চোখে পড়েছে বহু যাত্রী টিকিট চেকারের থেকে ‘এমইউটিএস’ টিকিট কাটছেন।

আসানসোল থেকে সেদিনই কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিলেন আইটি কর্মী অনিতা চট্টোপাধ্যায়। তিনি এই পরিষেবার সুবিধা পেয়ে খুশি প্রকাশ করেছেন। তার তরফে জানা গেছে, ‘এখন থেকে একদিকে যেমন সময় বাঁচবে অন্যদিকে হয়রানিও পোহাতে হবেনা যাত্রীদের। পরবর্তী সময়ে একটি অ্যাপ লঞ্চ করা উচিত রেলের, যা সাধারণ মানুষের মোবাইলে থাকবে এবং তিনি বাড়ি বসেই টিকিট কেটে নিতে পারবেন। ঠিক যেমন রিজ়ার্ভ টিকিটের ক্ষেত্রে দেখা হয়।’

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অধিকর্তা দীপ্তিময় দত্তের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ‘এই নতুন উদ্যোগের ফলে যাত্রীদের মূল্যবান সময় বাঁচার সাথে সাথে ভিড়ের চাপ অনেকটা কমবে।’ পূর্বে আসানসোল ডিভিশনের পক্ষ থেকে বৈদ্যনাথধামের মেলায় জসিডিতে পরীক্ষামূলক ভাবে এই মেশিন ব্যবহার করা হয়েছিল। তা সফলতার স্বাদ পাওয়ায় এবার আসানসোল স্টেশনে চালু করা হয়েছে এমইউটিএস। অন্যদিকে, রেলকর্মীরাও স্টেশনের যে কোনও জায়গা থেকে টিকিট দিতে পারবেন। পরবর্তীতে এটি কতটা সফলতা পাচ্ছে তা খতিয়ে দেখে স্টেশনগুলিতেও এমন ব্যবস্থা চালু করা হবে।