মোদী সরকারের (modi sarkar) জমানায় দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে বলেও দাবি কেন্দ্রীয় সরকারে (Central Government)। আগামী কয়েক বছরে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ হবে। মোদী সরকার বারংবার এ কথা বলেছে। শুধু দেশেরই নয়, সামগ্রিকভাবে দেশের জনগণেরও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এবার সেই দাবির পক্ষে গত কয়েক বছরে দেশের জনগণের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের নথি প্রকাশ করা হলো সর্বসমক্ষে।
মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের মাথাপিছু আয় (Per Capita Income) প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এমনই প্রমাণ দিচ্ছে পরিসংখ্যান। ২০১৪-১৫ সাল থেকে দ্রুত গতিতে বেড়েছে আয়। বর্তমানে গড়ে একজন ভারতীয়ের বার্ষিক আয় ১.৭২ লক্ষ টাকা। অর্থনীতিবিদদের বিশ্বাস, উপযুক্ত পুনর্বন্টন নীতির মাধ্যমে বছরে ৫%-৬%-এর মধ্যে এই মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধিকে ধরে রাখা যাবে। তবে এখনও দেশে সম্পদের অসম বন্টনের সমস্যা রয়ে গিয়েছে। আর সেটা দূর করাই মোদী সরকারের পক্ষে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
বর্তমান মূল্যে ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ সালে মাথাপিছু আয় ছিল যথাক্রমে ১,২৭,০৬৫ এবং ১,৪৮,৫২৪ টাকা। এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট যে, দেশে মাথাপিছু আয় (Per Capita Income) ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের (NSO) তথ্যানুসারে, মোট জাতীয় আয়ের পরিপ্রেক্ষিতে মাথাপিছু আয়, ২০২২-২৩ সালে ছিল ১,৭২,০০০ টাকা। এটি তার আগের বছরের তুলনায় ১৫.৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৪-১৫ সালে কত ছিল জানেন? মোদী সরকারের জমানা শুরুর সময়ে মাথাপিছু আয় (Per Capita Income) ছিল মাত্র ৮৬,৬৪৭ টাকা করে।
এই বিষয়ের বিপক্ষে বলেছেন অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ। তিনি অবশ্য পুরোটাই এত সহজভাবে নিতে নারাজ। তিনি বলেন, বর্তমান দামে জিডিপি অনুযায়ী মূল্যবৃদ্ধির হিসাব করলে মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধি অনেকটাই কম। JNU-এর অধ্যাপিকার মতে, এই টাকার বেশিরভাগটাই মোট জনসংখ্যার মাত্র শীর্ষ ১০%-এর কাছে জড়ো হয়েছে। বাস্তবে গড়ে বেতন/মজুরি কমছে। তাঁর মতে মাথাপিছু আয়ের বন্টনটি নিয়ে পর্যালোচনার অবকাশ রয়েছে।
অন্যদিকে এই বিয়য়টির পক্ষেও রায় দিয়েছেন অনেকে। অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান NIPFP-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর পিনাকী চক্রবর্তী পিটিআই বলেন, আন্তর্জাতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ভারতের মাথাপিছু আয়ের গড় বৃদ্ধি ছিল বার্ষিক ৫.৬% করে। এটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নতির ফলাফলই এই পরিসংখ্যান। কোভিডের সময়টায় যদিও আমাদের উপর কঠিন প্রভাব পড়েছে। তবে, দ্রুত কোভিডের পরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে ভারত।