টাটা (Tata) সংস্থা বরাবরই ভিন্ন। টাটা কর্ণধার রতন টাটা (Ratan Tata) বারে বারেই এমন কিছু ভেবে ফেলেন যা তাকে অন্য দের চেয়ে পৃথক করে তোলে। অন্যরা যেখানে শুধুই আলোচনা করে গেছে, সেখানে ওমেন এম্পাওয়ারমেন্ট (Women Empowerment) কথাটির যথাযথ মর্যাদা দিয়েছে এই সংস্থাই। ভারত তথা গোটা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে টাটা মোটরস এর পিম্পরি প্লান্ট (Pimpri Plant)। কারণ এই একটি গাড়ির কারখানা পুরোটাই সামলাচ্ছে মহিলারা। এখানে ডিজাইন থেকে প্ল্যানিং কিংবা ম্যানুফাকচারিং (Manufacturing) এখানে সব দায়িত্বই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মহিলা কর্মীদের উপর।
যদিও আজ থেকে ঠিক ৩ বছর আগে চিত্রটা একেবারে আলাদা ছিল। ১,১১০ মহিলা কর্মচারীর সঙ্গে মোট কর্মসম্পদে মহিলাদের অবদান ছিল মোটে ৩ শতাংশ। তবে টাটা সংস্থার মনে হয়, এই অনুপাতটি বাড়ানো উচিত। তাই ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে একটি নতুন লাইন তৈরি করে টাটা। যেখানে শহর, মফস্বল, গ্রামের স্কুল এবং আইটিআই থেকে সদ্য উত্তীর্ণ মহিলাদের নিযুক্ত করা হয় এই প্লান্টে।
আর যেমন ভাবা তেমন কাজ। সেই বছরের জুন মাস থেকেই শুরু হয় মহিলাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া। ৪৫ দিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় নিযুক্ত মহিলা কর্মীদের। এই মুহুর্তে টিসিএফ লাইনে ১৫০০ জন মহিলা কাজ করেন। যাদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছর। প্লান্টে অবস্থিত ৯৭ টি স্টেশনে নিযুক্ত করা হয়েছে এই মহিলাদের। সংস্থা জানিয়েছে, তাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য আসে ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে, ওই মাসে ২৫২ টি গাড়ি ম্যানুফাকচার হয়। পাশাপাশি সংস্থার কথায়, উক্ত প্লান্টে অবস্থিত টেস্ট ট্র্যাকে একাধিক এসইউভি পরীক্ষা করে দেখে তারা।
টাটা কোম্পানির টিসিএফ-২ প্যাসেঞ্জার ভেহিকেল লাইন পিম্পরি প্লান্ট মহারাষ্ট্রের পুনেতে অবস্থিত। যেখান থেকে তৈরি হওয়া সেডান, হ্যাচব্যাক এবং এসইউভি পৌছে যাচ্ছে দেশের একাধিক প্রান্তে। ভারত ছাড়িয়ে রফতানি হচ্ছে বাইরের দেশেও।
তবে বর্তমানে টাটা মোটরস এর দেখা দেখি আরও অনেক সংস্থাই মহিলা কর্মচারী নিয়োগে উদ্যোগী হয়েছে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, অশোক লেল্যান্ডও সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে অল উইমেন প্লান্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এই প্লান্টে ১০০ শতাংশ কর্মচারী মহিলা থাকবে বলে জানিয়েছে এই বাণিজ্যিক গাড়ি নির্মাতা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সংস্থাগুলির এই সিদ্ধান্তে আরও অনেক মহিলা উৎসাহিত হবেন। এই পদক্ষেপে ধীরে ধীরে মহিলারাও অটোমোবাইল শিল্প কে নিজের ভবিষৎ হিসেবে বেছে নেবার কথা ভাববেন। আর তার দ্বারা আমাদের দেশের অর্থনীতিতেও মহিলাদের সমপরিমাণ অংশীদারিত্ব থাকবে।