নিজস্ব প্রতিবেদন : গরু পাচার কাণ্ডের তদন্তে অসহযোগিতা, বারবার তলব এড়িয়ে যাওয়া সহ একাধিক কারণে বুধবার সন্ধ্যাবেলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন কেষ্টকন্যা (Anubrata Mondal) সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal)। তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে তা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই জল্পনা চলছিল। সেই জল্পনার অবসান ঘটে বুধবার সন্ধ্যাবেলায়। গ্রেপ্তারের আগে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয় সুকন্যা মণ্ডলকে এবং সেই সকল প্রশ্নের সদুত্তর না মেলার কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে সূত্র মারফত।
অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হওয়ার পর বর্তমানে তিনি রয়েছেন তিহার জেলে (Tihar Jail)। তৃণমূলের একজন দাপুটে নেতার এইভাবে গ্রেপ্তার হওয়া বারবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। অনুব্রত মণ্ডল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠার পাশাপাশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন তার মেয়ে সুকন্যা মন্ডল, যিনি পেশায় একজন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা হয়েও সম্পত্তির নিরিখে সকলকে তাক লাগিয়েছেন।
সুকন্যা মণ্ডল প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হওয়ার পাশাপাশি দুটি ফার্মের ডিরেক্টর। যে দুটি ফার্মের ডিরেক্টর পদে সুকন্যা রয়েছেন সেই দুটি ফার্ম অর্থাৎ এএনএম অ্যাগ্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড এবং নীর ডেভেলপার প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে গরু পাচারের কালো টাকা সাদা আহত বলে মনে করছেন সিবিআই এবং ইডি আধিকারিকরা। এইরকম পরিস্থিতিতে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ৩৫ পাতার একটি চার্জ সিট পেশ করে সিবিআই। যেখানেই সুকন্যা মন্ডলের সম্পত্তি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১২-১৩ অর্থবর্ষে সুকন্যা মন্ডলের বার্ষিক আয় ছিল ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। ঠিক তারপরের অর্থবর্ষে সেই আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছিল সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা। পরবর্তী অর্থবর্ষে সেই আয় কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় এবং হয় ১০ লক্ষ টাকা। কিন্তু ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে সুকন্যা মন্ডলের আয় লম্বা ঝাঁপ দেয়। যে বছর তার বার্ষিক আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ লক্ষ ৩২ হাজারে।
পরবর্তী অর্থবর্ষে সুকন্যা মন্ডলের আয় আরও দু’লক্ষ টাকা বৃদ্ধি পায়। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সুকন্যা মন্ডলের বার্ষিক আয় বিরাট লম্বা ঝাঁপ দেয়। যে বছর তার বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে অনুব্রত মন্ডলের মেয়ে সুকন্যা মন্ডলের বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। এরপর ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তাঁর আয় হয়েছে ৯২ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। এই সমস্ত আয় সুকন্যা মন্ডলের ব্যক্তিগত বলেই দেখানো হয়েছে। এছাড়াও তার নামে তিন কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। পাশাপাশি চালকল থেকে রোজগারের হিসাব আলাদা।