প্রধানমন্ত্রীর আসনে নরেন্দ্র মোদি বসার পর যেন এই পদ অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিজেপি সরকারের বদলে নরেন্দ্র মোদি সরকার কথাটাই বর্তমানে বেশি প্রচলিত। ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে একেবারে উপরের দিকেই রয়েছেন তিনি। দেশের সংবাদমাধ্যম তো ছাড়, বিদেশের সংবাদ মাধ্যমেও চর্চায় থাকেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী কেমন পোশাক পড়েন, কি ধরনের খাবার খান, কেমন তার জীবন শৈলী, তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা শক্ত – ইত্যাদি বিষয়ে মানুষজনের আগ্রহ কম নয়। কিন্তু আপনি কি জানেন দেশের সত্তরোর্ধ্ব প্রধানমন্ত্রী এখনও কতখানি ফিট?
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ পদে বসে রয়েছেন ৭২ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী যে বরাবরই স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখেন, সে কথা কারও অজানা নয়। নিয়মিত করেন যোগ অভ্যাস। তার খাদ্য তালিকাতেও রয়েছে চমক। ৭২ বছর বয়সেও অবলীলায় ঘুরতে পারেন বিভিন্ন শহরে। বিদেশ সফর করতে পারেন অবলীলায়। কিন্তু এতটা বয়স হলেও, কিভাবে এতখানি ফিট প্রধানমন্ত্রী? কি তার রহস্য? এই বিষয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
আমরা যেখানে বাড়ি থেকে অফিস, আর অফিস থেকে বাড়ি করেই ক্লান্ত, সেখানে এই বয়সেও ভারতের প্রধানমন্দ্রী মাত্র ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ৮টি শহরে পা রেখেছেন। ভাবা যায়! তাই তো গুণমুগ্ধ থেকে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা, সবাই একবাক্যে নরেন্দ্র মোদীর ফিটনেসকে বাহবা দেন। বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই বয়সে বেশিরভাগ জনই বাড়িতে বসে অবসর জীবন কাটান। বড়জোর সকালবেলা মর্নিং ওয়াক করেন। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই মিথ ভেঙে দিয়েছেন। তিনি এই বয়সেও নিয়মিত দৌড়ে বেরাচ্ছেন। সামলাচ্ছেন ভারতের মতো দেশের চালন ক্ষমতার ভার।
তিনি চির তরুণ। তাঁর প্রাণশক্তির কাছে হার মানবে নব প্রজন্ম। যেমন ফ্যাশন সেন্স, তেমনই ফিটনেস। তাই ৭২ বছর বয়সেও তাঁর ফিটনেসের দৌড় দেখে মুখ হাঁ হয়ে যায় তাবড় বিশেষজ্ঞের। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু নিয়মিত যোগাভ্যাস করেন। তিনি প্রাচীন ভারতীয় যোগভ্যাসের উপর ভরসা রাখেন। এত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিদিন অভ্যাস করেন যোগব্যায়াম। অতীতে তিনি টুইট করে জানিয়েছিলেন, যোগভ্যাস আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বহু বছর ধরে এই অভ্যাস আমার রয়েছে। নিয়মিত যোগভ্যাস করে আমার আমার উপকারই হয়েছে। তাই আপনিও যদি তাঁর মতো ফিট থাকতে চান, তবে নিয়মিত যোগভ্যাস করুন। শরীর-মন দুইই তরতাজা থাকবে।
নরেন্দ্র মোদী সপ্তাহে অন্তত একবার যোগ নিদ্রা অভ্যাস করেন। কোনও কোনও সপ্তাহে দুইবারও তিনি যোগ নিদ্রা প্র্যাকটিস করেন। তাঁর কথায়, যোগা নিদ্রার মাধ্যমে মন শান্ত হয়। কমে দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠার মতো সমস্যা। বর্তমান সময়ে হওয়া বিভিন্ন গবেষণা জানাচ্ছে, আমাদের শরীরে নানাবিধ ক্রনিক রোগের কারণ কিন্তু দুশ্চিন্তা। এর সঙ্গে ডায়াবিটিস, হাই ব্লাড প্রেশারের মতো অসুখের যোগ রয়েছে। তাই এমন রোগ থেকে বাঁচতে চাইলে আপনিও প্রধানমন্ত্রীর মতো যোগ নিদ্রার অভ্যাস করতে পারেন।
দেশের প্রধানমন্ত্রীর সকালের রুটিনও দেখার মতো। এই বয়সেও তিনি রোজ সকালে নিয়ম করে হাঁটেন। তাঁর কথায়, পৃথিবী, জল, অগ্নি, বায়ু ও আকাশের সঙ্গে তাঁর মিলন হয় হাঁটার মাধ্যমে। এর মাধ্যমেই তিনি তরতাজা থাকতে পারেন। এছাড়া সক্কাল-সক্কাল তিনি ব্রিদিং এক্সারসাইজও করেন। ফলে মন ও শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় বলে টুইট করে জানিয়েছিলেন তিনি।
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু নিরামিশাষী। তাই সকালের ব্রেকফাস্টে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি। এই খাবারে থাকা ভিটামিন ও খনিজ তাঁকে সারাদিন সুস্থ ও তরতাজা থাকতে সাহায্য করে। এছাড়া তিনি প্রাতঃরাশ সারেন সময় মেপে। এক্ষেত্রে সকাল ৯টার মধ্যে তিনি ব্রেকফাস্ট সেরে ফেলেন। তাই তাঁর মতো ফিট থাকতে চাইলে এই নিয়ম মেনে চলুন।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, নিয়মিত উষ্ণ জলপান করা তাঁর জীবনযাত্রার অংশ। এছাড়া মাঝেমাঝেই এক থেকে দুই দিনের জন্য উপোস করেন। এমনকী রাতে নাকে এক ফোঁটা করে সরষের তেল দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস রয়েছে তাঁর। এটাই তাঁর সুস্থ থাকার রহস্য। তাই ৭২ বছর বয়সে পৌঁছেও নরেন্দ্র মোদী এতটা ফিট। আপনিও তাঁর মতো নীরোগ জীবন কাটাতে চাইলে এই নিয়মগুলি মেনে চলতেই পারেন।