বহু বিতর্ক এর সৃষ্টি হয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ (The Kerala Story) ছবিকে কেন্দ্র করে। এমনকি এই ছবির মুক্তি স্থগিত রাখার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এক সংগঠন। শুনলে অবাক হবেন যে প্রায় ১০টি দৃশ্য ছবি থেকে বাদ চলে যাওয়ার পরই মিলেছে মুক্তির ছাড়পত্র। সুদীপ্ত সেনের এই ছবি উত্তপ্ত করেছে গোটা জাতীয় রাজনীতিকে।
‘দ্য কেরালা স্টোরি’(The Kerala Story) সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। একদিকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এই ছবিকে বিদ্বেষমূলক, প্রচারসর্বস্ব বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, এই ধরনের ছবি সঙ্ঘ পরিবারের মদতপুষ্ট। অন্য দিকে, কর্নাটকে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সুদীপ্ত সেনের এই ছবির পক্ষ নিয়েছেন। তিনি স্বয়ং পাল্টা তোপ দেগেছেন জাতীয় কংগ্রেসকে।
প্রায় এক বছর আগে এরকমই একটি ছবি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ (The Kerala Story) নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়। এক দল ছবির পক্ষ নিয়েছিল, তো অন্য আরেকদল এই ছবির চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছিল। ঠিক এক বছরের মধ্যে দর্শকদের জন্য এলো ‘দ্য কেরালা স্টোরি’, খানিকটা যেন একইরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। কিন্তু খুশির খবর হলো মুক্তি পাওয়ার পরই এই ছবি হারিয়ে দিয়েছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’কে। তা-ও আবার প্রথম দিনেই বক্স অফিস এ সব রেকর্ড ফেল করে দেয় সিনেমাটি।
হিন্দি ছাড়াও আরও চারটি দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায় মুক্তি পেয়েছে এই হিট ছবি। কিন্তু এই বিতর্কিত ছবির হল পাওয়া নিয়ে ভীষণ বিরোধিতা শুরু হয় কেরলে। সূত্রের মাধ্যমে জানা যায় যে, কোচি শহরে মোটে একটি হল মিলেছিল। অবাক করার মত ঘটনা হলো বেশ কিছু মাল্টিপ্লেক্সে বাতিল করা হয় শো। এত বাধা সত্বেও প্রথম দিনেই প্রায় ৭.৫ কোটি টাকা আয় করেছে এই ছবি। ২০২৩ সালে পঞ্চম সর্বাধিক আয় করা ছবির তালিকায় নাম নথিভুক্ত হল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’।
প্রথম দিনের আয়ের নিরিখে অবশ্য ‘পাঠান’ সবার আগে। এই ছবির আয় ছিল ৫৫ কোটি। তার পর ‘কিসি কা ভাই কিসি কা জান’। তার আয় ১৫.৮১ কোটি, তৃতীয় হলো ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’ যা প্রায় ১৫.৭ কোটি আয় করে। চতুর্থ নাম্বারে রয়েছে অজয় দেবগনের ‘ভোলা’, যার প্রথম দিনের আয় ছিল প্রায় ১১ কোটির উপরে। অন্য দিকে, বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ ছবির আয় ছিল প্রায় ৩.৫ কোটি। প্রথম দিকে যদিও এই ছবিটি খুব বেশি শো পাইনি, তবুও হার মানিয়েছে বড় বড় ছবিকে। আস্তে আস্তে দর্শকের প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর বাড়ানো হয় হল ও শোয়ের সংখ্যা। এবার দেখার হলো ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র ক্ষেত্রে আগামী দিনে নতুন কোনও বিতর্ক হয় কি না নাকি বেশি লক্ষ্মীলাভ হয়। অপেক্ষা শুধু সেটারই।
তবে প্রশ্ন হল কেন এই সিনেমা এত সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠল আর তা পশ্চিমবঙ্গে ব্যান হলো? ছবিটি আসলে হিন্দু তরুণীদের ফাঁদে ফেলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করা এবং তাদের জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যোগ করানোর প্রেক্ষাপটকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে। সিনেমার মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আদা। তাকে শালিনী থেকে হতে হয়েছে ফাতিমা। তার গল্প নিয়েই এই সিনেমা তৈরি। তবে এই ছবিতে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তাকে বিরোধীদের তরফ থেকে বিজেপির প্রোপাগান্ডা বলা হচ্ছে। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিনেমাকে রাজ্যে বায়ান ঘোষণা করেছেন।