বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিলেন মৌসুমী, কেমন হলো তার ফলাফল

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার (HS Exam) শুরু হওয়ার দ্বিতীয় দিনেই অঘটন। অঘটন ঘটে বীরভূমের বোলপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মকরমপুরের বাসিন্দা মৌসুমী দলুইয়ের পরিবারে। ইংরেজি পরীক্ষার দিন হঠাৎ ভোরবেলায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার ৪০ বছর বয়সী বাবা অষ্টম দোলুই। এই পরিস্থিতিতেও নিজেকে সামলেও পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন মৌসুমী। উচ্চ মাধ্যমিকের প্রতিটি পরীক্ষায় তিনি দেন আর তার ফলাফল বুধবার হাতে এলো।

Advertisements

বুধবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর দেখা যায় মৌসুমী দোলুই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। নম্বর এসেছে ৩০৯। বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিয়ে তার এমন নম্বর তার অদম্য লড়াইকেই জানান দেয়। যদিও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং তার মধ্যেও অনেক আশা ছিল আরও ভালো ফলাফল করার। যদি এমন ঘটনা না ঘটতো তাহলে হয়তো আরও ভালো ফলাফলই হতো।

Advertisements

অন্যদিকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাশ করেও চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন মৌসুমী। কারণ আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ওই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারি ব্যক্তি ছিলেন তার বাবা। বাবা মারা যাওয়ার পর তার মা বোলপুরের নেতাজি মার্কেটে থাকা চায়ের দোকান সামলাচ্ছেন এবং সেখান থেকে যা উপার্জন হচ্ছে তা দিয়েই চলছে তাদের সংসার। এমন পরিস্থিতিতে উচ্চ শিক্ষার খরচ কোথায় থেকে আসবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন মৌসুমী।

Advertisements

আর্থিক অনটন এবং প্রতিকূলতা থাকলেও মৌসুমীর ইচ্ছে আগামী দিনে ভূগোলে। স্নাতক করার ভূগোল যদি না পান তাহলে অন্য কোন বিষয় নিয়েও স্নাতক করার ইচ্ছে রয়েছে তার। তবে এই ইচ্ছে কতটা পূরণ হবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয় এবং সেই সংশয়ের কথা বলতে গিয়ে বারবার তাকে থমকে যেতে হয়েছে। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা এখনো ঠিকভাবে করেই উঠতে পারেননি মৌসুমী।

যদিও মৌসুমী আশাবাদী যেমন সমস্ত প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে তিনি উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হয়েছেন ঠিক সেই রকমই আগামী দিনেও নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে সক্ষম হবেন। তবে এর পাশাপাশি তিনি সহৃদয় ব্যক্তিদের সাহায্য প্রার্থনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি তাকে তার পড়াশুনো চালানোর জন্য সাহায্য করেন তাহলে তিনি উপকৃত হবেন।

Advertisements