নিজস্ব প্রতিবেদন : চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) মিশন সফল হওয়া ভারতকে বিশ্বের দরবারে নতুন জায়গা দিয়েছে। ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রম এমন সফলতা এনে দিয়েছে ভারতকে। ইতিমধ্যেই চাঁদের মাটি থেকে ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) এবং রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan) অজানা সব তথ্য তুলে দিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগারের বিজ্ঞানীদের হাতে। এখন তারা চাঁদের মাটিতে স্লিপ মোডে রয়েছে।
তবে স্লিপ মোডে থাকলেও বিভিন্ন ধরনের রহস্যময় ঘটনা চাঁদের মাটিতে ঘটে চলেছে এবং সেই সকল ঘটনা সম্পর্কে তথ্য আসছে ইসরোর বিজ্ঞানীদের হাতে। সেই সকল ঘটনা নিয়েই কৌতূহল আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিনে চাঁদের মাটিতে কম্পন অনুভব করেছিল ল্যান্ডার বিক্রম। এমন ঘটনা স্বাভাবিক বলেই জানানো হয়েছিল ইসরোর বিজ্ঞানীদের তরফ থেকে। কিন্তু এখন যখন চাঁদে রয়েছে অন্ধকার সেই সময় চাঁদের মাটি ঘনঘন কেঁপে উঠছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও রহস্যময় শব্দ শোনা গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
চাঁদে অন্ধকার নেমে আসার পর ঘন ঘন কম্পন এবং রহস্যময় এই শব্দ নিয়ে রীতিমত উৎসুক ইসরোর বিজ্ঞানীরা। কম্পনের বিষয়টি যতটাই উৎসাহ করে তুলেছে বিজ্ঞানীদের, তার থেকেও বেশি উৎসাহ তৈরি হয়েছে রহস্যময় শব্দ নিয়ে। এই বিষয়ে বিজ্ঞানীদের তরফ থেকে নানান গবেষণা চালানো হচ্ছে। এখন ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান ঘুমন্ত অবস্থায় রয়েছে, এক্ষেত্রে ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় চাঁদের মাটিতে সূর্যের আলো পড়লে তাদের দুজনের জেগে ওঠার আশায় দিন গুণছেন বিজ্ঞানীরা।
জিও ফিজিক্যাল রিসার্চ জার্নালে ক্যালটেক প্রতিষ্ঠানের গবেষক ফ্র্যান্সেসকো সিভিল্লিনি জানিয়েছেন, চাঁদ মোটেই শান্তশিষ্ট এলাকার নয়। তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে চন্দ্রপৃষ্ঠে কম্পন অনুভূত হচ্ছে। চাঁদে যেহেতু তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বায়ুমণ্ডল নেই তাই দিনের আলোয় তাপমাত্রা ১২০° তে পৌঁছে যায় আর রাতে তাপমাত্রা -১৩০ ডিগ্রিতে পৌঁছায়। এই তাপমাত্রা দ্রুত হারে পরিবর্তন হয় আর তার ফলে চন্দ্রপৃষ্ঠ প্রসারিত ও সংকুচিত হয়। এর ফলেই চাঁদে কম্পন, ফাটল দেখা যায়।
গবেষক অ্যালেন হাস্কার জানিয়েছেন, চন্দ্রপৃষ্ঠে সূর্যালোক এসে পৌঁছানোর পরই সকালের দিকে একটি কম্পন অনুভূত হয়। এই কম্পন স্বাভাবিক। এই কম্পন বারবার হয়ে থাকে এবং চাঁদের হিসাবে ৫-৬ মিনিট অন্তর অন্তর আর পৃথিবীর হিসাবে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা অন্তর অন্তর তা হয়। চাঁদে কম্পনের বিষয়টি বহু গবেষকের কাছে স্পষ্ট হলেও রহস্যময় যে শব্দের বিষয়ে জানা যাচ্ছে তা সম্পর্কে অবশ্য তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আগামী দিনে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা চাঁদ সম্পর্কে আরো কি কি তথ্য সকলের সামনে প্রকাশ করেন সেটাই এখন দেখার।