বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সে দেশে এক অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যার রেশ এখনো কাটেনি। এক নতুন বাংলাদেশের চিত্র সামনে এসেছে। তারই মাঝে আরও একটি খবর প্রকাশ্যে এসেছে।সে দেশে মোট ছয়টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে প্রায় তালা ঝোলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে হিসেবে নাম রয়েছে সরকারি খাতায় কিন্তু যথাযথ পরিকাঠামোর অভাব। ডাক্তারি পড়তে যে নির্দিষ্ট ল্যাব প্রয়োজন হয় সেটিরও কোনো অস্তিত্ব নেই, পড়ানোর জন্য নেই শিক্ষিক। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে যে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তাতে বলা হয়েছে দক্ষ চিকিৎসক তৈরিতে কোনো দিকে আপোস করা হবে না। বন্ধ করে দেওয়া মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে তাদের পাঠানো হবে নিকটবর্তী কোনো মেডিকেল কলেজে।
দেশের স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতরের পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেনের কথায়, বাংলাদেশের ৬ মেডিকেল কলেজের একটিতেও স্থায়ী ক্যাম্পাস এর অস্তিত্ব নেই। সদর হাসপাতাল বা ভাড়া ভবনে ক্লাস নেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। উন্নত মানের ল্যাব নেই কলেজে আর পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে অন্য কলেজ থেকে শিক্ষক এনে পড়াশুনা চলে। আবার এত অভাবের মাঝেও আসন সংখ্যা বাড়ানোর কাজ অব্যাহত রয়েছে। তাই এই ছয় মেডিকেল কলেজ প্রায় বন্ধের মুখে।
আরও পড়ুন: UPI: বড় ঘোষণা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে! মাত্র ২০০০ টাকার ইউপিআই লেনদেনে মিলবে ইনসেনটিভ
অন্যদিকে আরও এক অভিযোগ সামনে এসেছে আওয়ামী লীগ সময়কার প্রভাবশালী মন্ত্রী, এমপি ও আমলা এই ৬ মেডিকেল কলেজ তৈরির কাজে ছিলেন। সেই কারণে মেডিক্যাল কলেজ গুলিতে তালা ঝোলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ২০১৮ সাল নাগাদ অনুমোদন পায় নেত্রকোণা মেডিকেল কলেজ। তবে দীর্ঘ ৬-৭ বছর কেটে গেলেও পরিকাঠামো ব্যবস্থার কোনো উন্নতি সাধন হয়নি। সদর হাসপাতালে টিমটিম করে চলছে ক্লাস। তার ওপর গতবছর আসন সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭০ করা হয়েছে। যা রীতিমতো হাস্যকর।
ওই কলেজের শিক্ষার্থীদের কথায়, নেত্রকোণা মেডিকেল কলেজে রেজিস্ট্রার বা সাব-রেজিস্ট্রার এর কোনো দেখা নেই। ফুল টাইম শিক্ষকের অভাবে পার্ট টাইম শিক্ষকদের ওপর সব চাপ। তা বাদে নেই কোনো প্রয়োজনীয় ল্যাবের ব্যবস্থা। হাতে কলমে শেখার কোনও উপকরণ না থাকায়, পুঁথির ওপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে তাদের।
গত ছয় বছর কেটে গেলেও চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের জমি জায়গা এখনো জোগাড় হয়নি। সদর হাসপাতালের মাত্র আটটি কক্ষই ভরসা। পড়ুয়ারা জানিয়েছে, স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে না ওঠায় শিক্ষার্থীদের জায়গা হয় না। এক ব্যাচের ক্লাস চলাকালীন অন্য ব্যাচ বাইরে অপেক্ষা করে। হোস্টেল না থাকায় একটা ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নেত্রকোণা মেডিক্যাল কলেজ ছাড়াও নওগাঁ, নীলফামারী, মাগুরা ও হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজও প্রায় ধুঁকছে। জানা গিয়েছে, এই কলেজের পেছনেও ছিল আওয়ামী লীগ আমলের প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপি ও আমলা।