দুঃসময়ে পাশে থাকার প্রতিদান, রিক্সাওয়ালাকে কোটি টাকার সম্পত্তি লিখেদিলেন বৃদ্ধা

শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : বাস্তবের মাটিতে এ যেনো স্বপ্নের মত! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। ওড়িশার সুতাহাট এলাকার মিনতি পট্টনায়েকের উদারতা মুগ্ধ করেছে আমাদের। মন ছুঁয়ে গেছে এ কাহিনী পাঠকদের।

আসুন তবে জেনে নেই ঘটনাটি কি? ওড়িশার কটকের সুতাহাট এলাকার বছর ৬৩-র এক বৃদ্ধা মিনতি পট্টনায়েক, যিনি নিজের সমস্ত স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি এক রিকশাচালকের নামে লিখেদিলেন। যে ঘটনায় চমকে গিয়েছেন সমস্ত কটকবাসী তথা সমস্ত পাঠকরা। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ওই রিকশাচালকের সেবার প্রতিদান হিসেবে তিনি তাঁর সমস্ত সম্পত্তি তাঁর নামে লিখে দেন।

জানা গিয়েছে, গত বছর ওই বৃদ্ধার স্বামী মারা যান এবং এই বছর তাঁর মেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দুজনের মৃত্যুর পরবর্তী সময় থেকেই সময়ে অসময়ে সমস্ত প্রয়োজনে ওই রিক্সাওয়ালা তাঁর পাশে থেকেছেন। প্রতিটা খারাপ মুহূর্তে তাঁকে বিভিন্নভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

ওই বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ‘আমার স্বামী ও মেয়ের মৃত্যর পর থেকে আমি মারাত্মকভাবে ভেঙে পরি। সেই সময় আমার কোনো আত্মীয় আমার পাশে ছিল না। আমি সম্পূর্ণ একা হয়ে গিয়েছিলাম। এই কঠিন সময়ে বুধা ও তাঁর পরিবার আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। বিনিময়ে কোনো কিছু পাওয়ার আশা ছাড়াই তাঁরা আমার দেখভাল করেছে। আমার স্বাস্থ্যের যত্ন নিয়েছে। আমার আত্মীয়দের অনেক সম্পত্তি, আমি তাই বরাবরই চাইতাম মৃত্যুর আগে আমার সম্পত্তি গরীব দুঃখীদের দিয়ে যেতে।’

আরও জানা গিয়েছে, তাঁর এই সম্পত্তি হস্তান্তরের সিদ্ধান্তে বিরোধী ছিলেন তাঁর এক বোন। কিন্তু তিনি আইনি সহায়তায় সমস্ত ব্যবস্থা করেছেন যাতে ওনার অবর্তমানে সমস্ত সম্পত্তি বুধার হাতে হস্তান্তরিত হয়। সম্পত্তি হিসাবে ওই বৃদ্ধা তার তিনতলা বাড়ি, সোনা গহনা সহ সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন।

এত বিশাল প্রাপ্তিতে আপ্লুত ওই রিক্সাচালক বুধা। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে মায়ের সবরকম খেয়াল রাখার চেষ্টা করেছি, আগামী দিনেও সেটা করে যাবো।’ আজকের পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে এমন কিছু ঘটনা যেনো আবারও আমাদের মুগ্ধ করে।