Ilish: বাংলাদেশের বাজারে ইলিশের দাম এবার আকাশ ছোঁয়া! নববর্ষের ভারতে রপ্তানিতে ‘না’ বিক্রেতাদের তরফে

কথাতেই আছে মাছে ভাতে বাঙালি। বাঙালি বাড়িতে মাছ ছাড়া একটি দিনও চলে না। মাছের বাজারে গেলেই ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে চলে দর কষাকষি। বাঙালির ভাতের পাতে মাছ ছাড়া অন্য কিছু যেন মুখে রূচতে চায় না। পারশের লাল ঝাল থেকে কাচা লঙ্কা চিরে কাঁটাপোনার পাতলা ঝোল একবারে যেন অমৃত বাঙালির পাতে। আর বঙ্গে বর্ষা এলে তো কথাই নেই, পেটে ডিম ভরা ইলিশের সাথে দু হাতা ভাত বেশি খায় বাঙালি।

ইতিমধ্যেই দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে বাংলা নববর্ষ। বছরের শুরুতেই যদি টাটকা পেটে ডিম ভরা ইলিশ আসে তাহলে তো জমে ক্ষীর বাঙালির অলস দুপুর। তবে ইলিশের দেখা নববর্ষের শুরুতে মিলবে কিনা তা বোঝা খুব মুশকিল। কারণ এই মরসুমে বাংলাদেশের সাধারণ মাছ বিক্রেতারাদের তরফে জানানো গিয়েছে, চলতি বছর ইলিশের যা হাল হয়েছে তাতে নাকি এবারের পয়লা বৈশাখে ভারতে ইলিশ রফতানি করার কথা সরকারের ভুলে যাওয়াই ভাল। সম্প্রতি বাংলাদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে এই কথা ছড়িয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন: Rail Engine: রেল ইঞ্জিন উৎপাদনের নিরিখে বিশ্ব তালিকায় প্রথমেই জ্বলজ্বল করছে ভারতের নাম!

নববর্ষ আসার আগেই কেন এমন বিষাদের সুর বাংলাদেশের মাছ বিক্রেতাদের গলায়?
চলতি মরসুমে ইলিশের বাজার নিয়ে বেশ সংশয় তৈরি হয়েছে। নববর্ষের আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন মাছ বাজারে ঢু মারলে দেখা মিলছে না মনের মতো রুপোর ইলিশের। যতটুকু মাছের দেখা মিলছে তাও অধিকাংশই আকারে বড় নয়। আর এই ছোট ইলিশের দাম শুনলেই চোখ কপালে উঠে যাচ্ছে আমজনতার। সোনার দরে যেন বিকোচ্ছে ইলিশ। বাংলাদেশি বিভিন্ন পত্র পত্রিকা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশি মুদ্রায় মাঝারি আকারের ১ মণ ইলিশের দাম ১ লক্ষ টাকারও বেশি! হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। ১ লক্ষের ঘর ছাড়িয়েছে ইলিশের দাম।

বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গত শুক্রবার বরিশালের পোর্ট রোড বাজার ও মোকাম ঘুরেও হাতেগোনা ইলিশেরই দেখা মিলেছে। বাংলাদেশী মুদ্রা অনুযায়ী এই দুটি বাজার ঘুরে ইলিশের মণ প্রতি যে খুচরো দর সামনে এসেছে, তা হল ১ কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের মাছ প্রতি মণ ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। আবার ১ কেজি আকারের ইলিশের মণ ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা, অন্যদিকে আধা কেজি ওজনের মাছ ৫৫ হাজার টাকা মণ দরে বিকোচ্ছে। তাই ইলিশের দামে যে আগুন লেগেছে তা নিঃসন্দেহে বলা চলে। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা ইলিশের লোভে বাজারে উঁকি মারলেও, খালি হাতেই ফিরে আসতেই হচ্ছে।

স্থানীয় মৎস্য বিক্রেতা, মৎস্যজীবীদের সংগঠন ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের তরফে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় মাছ ধরার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যার ফল স্বরূপ মাছ বেশি পরিমাণে জালে ধরা দিচ্ছে না। শুক্রবার স্থানীয় বাজারে ৫০ মনও মাছের দেখা মেলেনি সকালের দিকে। বেলা বাড়তে মাছ বাজারে এলেও দাম যে কে সেই ছিল।

সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, নববর্ষের শুরুতে ইলিশের দাম আরও অবাক করতে পারে ক্রেতাদের কারণ চাহিদার তুলনায় জোগান অনেকটাই কম। এরপর আবার ভারতে এই মাছ রপ্তানি করা হলে, স্থানীয় বাজারে চরম সংকট দেখা দেবে ইলিশের। দামও হবে মাত্রা ছাড়া। যার কারণবসত মাছ বিক্রেতা থেকে মৎস্যজীবী সকলেই স্পষ্টত জানাচ্ছে এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নববর্ষে ভারতে মাছ পাঠানোর কথা ভাবা উচিত নয় বাংলাদেশ সরকারের। অন্যদিকে একটা স্বস্তির খবরও ভেসে আসছে মৎস্য দফতরের তরফে। জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশে বর্ষাই ভরসা জোগাতে পারে ইলিশের পরিমাণকে। বর্ষার মুখ দেখলে নদীতে জল বেড়ে ইলিশও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।