মাথায় হাত অনুব্রতর! এবার সিবিআইয়ের স্ক্যানারে কেষ্ট ঘনিষ্ঠ ধাবা সঙ্গী!

নিজস্ব প্রতিবেদন : গরু পাচার কাণ্ডে (Cattle Smuggling) বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) গ্রেপ্তার হওয়া দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে এক বছরের বেশি সময়। দীর্ঘ এই সময় ধরে জেলবন্দি থাকার পর অনুব্রত মণ্ডলের সেই দাপট আর নেই। এর পাশাপাশি প্রতিদিনই তাকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন সংশয়। এমনিতেই তিহার (Tihar) বন্দি অনুব্রত মণ্ডল এবং তার মেয়ে সুকন্যা (Sukanya Mondal)। তারপর আবার সিবিআই (CBI) এবং ইডির (ED) চাপ প্রতিনিয়ত মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল এই নেতার।

গরু পাচার মামলা পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিল্লি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা চালাতে দেখা যাচ্ছে ইডি আধিকারিকদের। যদিও এই মামলা সরানো নিয়ে পরপর দুবার আদালতে ধাক্কা খাওয়াই কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে ছিল কেষ্টর। তবে সেই স্বস্তি ফিরতে না ফিরতেই নতুন এক অস্বস্তি হাজির অনুব্রতর মাথায়। আর সেই অস্বস্তি হল অনুব্রতর ধাবা সঙ্গী। যা নিয়ে মঙ্গলবার থেকেই সরগরম রাজ্য।

আসানসোল থেকে যখন অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই সময় শক্তিগড়ে টিফিন করতে নামেন অনুব্রত মণ্ডল। পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যেই তাকে নিয়ে যাওয়া হলেও লক্ষ্য করা গিয়েছিল শক্তিগড়ের ধাবায় সেই পুলিশে ঘেরাটোপকে টপকে অনুব্রতর সঙ্গে বসে গল্প করেন তিনজন। ওই তিনজন অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে টিফিনও করেন। এই তিনজনের মধ্যেই একজন হলেন কৃপাময় ঘোষ (Kripamoy Ghosh)। অনুব্রত মণ্ডলের যে সকল ঘনিষ্ঠ রয়েছেন তাদের মধ্যে কৃপাময় ঘোষ হলেন অন্যতম।

কৃপাময় ঘোষের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠতা এতটাই যে প্রায়শই তাকে দেখা যেত বোলপুরের অনুব্রত মণ্ডলের নিচুপট্টির বাড়ির অন্দরে। অনুব্রত মণ্ডলের পরিবারের একজন সদস্যের মতো হয়ে গিয়েছিলেন কৃপাময়। এবার এই কৃপাময়কে সিবিআই তলব করেছে এবং তাকে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একের পর এক মামলার চাপ তারপর আবার নতুন করে কৃপাময়কে সিবিআই ডেকে পাঠানোর কারণে অনুব্রত মন্ডলের মাথায় হাত পড়াটাই স্বাভাবিক।

কৃপাময় ঘোষ হলেন বোলপুরের নিচুবাঁধগোড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি কলেজে পড়ার সময় থেকেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করতেন এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করার সময়ই তিনি নজরে এসেছিলেন অনুব্রতর। এরপর তিনি মৎস্য দপ্তরে চাকরিও পেয়েছিলেন। শুধু মৎস্য দপ্তরে চাকরি করেই তিনি থেমে থাকেননি। পরে গাড়ির ব্যবসা শুরু করে রাতারাতি ফুলেফেঁপে উঠেছেন তিনি। তার রাতারাতি এইভাবে ফুলেফেঁপে ওঠা নিয়ে চর্চার শেষ নেই বোলপুর জুড়ে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের নজরে রয়েছে তার একাধিক বিলাসবহুল চারচাকা গাড়ি, দামি দামি ফোন সহ জমি জমা। এছাড়াও অনুব্রত মণ্ডলের নামে বেনামে থাকা বেশ কিছু জমির দেখভাল করতেন তিনি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, কৃপাময় ঘোষের অ্যাকাউন্টেও বেশ কিছু সন্দেহজনক টাকা পয়সার লেনদেন হয়েছে।