‘তাড়িয়ে দিলো পদ্ম, ফুলটুসি জব্দ’, শোভন-বৈশাখী, কুণাল, তিনের মন্তব্যে আগুনে ঘি ঢালছে

নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘদিন ধরে রত্না, শোভনও বৈশাখীকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে আছে। নারদ কান্ডে অভিযুক্ত প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় সহ আর তিন হেভিওয়েটকে গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছিলো হাইকোর্ট।

তবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে একটি ঠিকানা বিভ্রাট তৈরি হয়েছিলো। কারণ সিবিআই-এর কাছে তার পর্ণশ্রী বাড়ির ঠিকানা ছিল কিন্তু তিনি ফিরে যেতে চেয়েছিলেন গোলপার্কের ফ্ল্যাটে। এই নিয়ে ক্রমশ জলঘোলা হচ্ছিল আর নানান বক্তব্য উঠে আসছিল বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায় তরফ থেকে আর তার‌ই মধ্যে আগুনে ঘি দেওয়ার মতো কুণাল ঘোষের বক্তব্য এসে পড়েছিলো।

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, “তাড়িয়ে দিলো পদ্ম, ফুল-টুসি জব্দ।” এরপর শোভন চট্টোপাধ্যায় কুণাল ঘোষের বক্তব্য নিয়ে বলেছেন, “যারা বিভিন্ন সময় জেলের মধ্যে কাটিয়েছেন তারা এখন তৃণমূলের মুখপাত্র হয়ে কথা বলছেন। মহিলাদেরকে উনি সম্মান করতে পারেন না, তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে উনি বলছেন কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে নিয়ে তো কিছু বলা হয়নি। আইনগত বিষয়ে, চিকিৎসার বিষয় নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথায় আমরা জানিয়েছিলাম।

এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “যারা চিটফান্ড মামলায় দীর্ঘদিন গ্রেফতার হয়েছিলেন, তারা আজ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বলার আগে ভেবে দেখুন যে আপনারাই এক সময় গ্রেপ্তার হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছিলেন। তাই সেই ব্যক্তির কথার কোনো গুরুত্বই আমার কাছে নেই।”

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, এসএসকেএম হাসপাতাল জোরপূর্বক শোভন বাবুকে আটকে রেখেছেন, দীর্ঘদিন ধরে যে ওষুধগুলো তিনি খান সেগুলোই এখানে তাকে দেওয়া হচ্ছে, এখানে তার বাড়তি কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না।

তার কথায়, “মেডিক্যাল সুপারকে রিকোয়েস্ট করা হয়েছে যে অচেনা লোককে ঢুকতে দেওয়া হবে না তা সত্ত্বেও কেউ এসে দরজায় লাথি মারলেও তাকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। কেন এমনটা হচ্ছে? ওষুধেই যিনি সুস্থ হয়ে যান তাকে কেন হাসপাতালে জোর করে রাখা হচ্ছে? সুপার বলছেন জেল এডভাইস করলে ছাড়বে, জেল বলছে সুপার এডভাইস করুক, এই চলছে।”

এর পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, “এর পিছনে যে চাপ আছে পর্ণশ্রী বাড়িতে আসতে হবে আপনার লিগাল পরিবারকে আপনার পাশে থাকতে হবে সেগুলোও শোনা যাচ্ছে। কোথা থেকে চাপ আসছে জানি না তবে চাপের কাছে যে নতি স্বীকার করেছে এসএসকেএম হাসপাতাল সেটা বোঝা যাচ্ছে। একজন সাধারণ মানুষ নিজের জন্য যা কিছু চাইতে পারে, রাজনৈতিকভাবে ভিক্টিমাইজ হ‌ওয়া মানুষ তা করতে পারেন না। দুই সরকারের এই নগ্ন ক্ষমতার ব্যবহার অত্যন্ত পীড়া দিচ্ছে।”

শোভন-বৈশাখীর এই বক্তব্য শোনার পর কুণাল ঘোষ বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের যে তিনজন নেতাকে সিবিআই গ্রেফতার করেছিলো সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র তিনজন গুরুতর অসুস্থ হ‌ওয়া সত্ত্বেও প্রেসিডেন্সি জেলে ছিলেন ও আদালতের নির্দেশ মেনে তারা সব করেছেন। এই তিনজনের বাইরে আরেকজন যিনি গ্রেপ্তার আছেন তিনি অভিযোগ করে যাচ্ছেন যে রহস্যজনকভাবে হাসপাতাল রাজ্য সরকার তাকে আটকে রেখেছে।”,

[aaroporuntag]
কুণাল ঘোষের কথায়, “আমি একটা রিয়্যাকশন দিয়েছিলাম বলে জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে তিনি দীর্ঘক্ষন আমাকে গালাগালি করেছেন তাতে আমি খুব খুশি হয়েছি এবং আমি খুব নিশ্চিতভাবে দাবি করতে পারি উনি পূর্ণ সুস্থ। তাকে যেন অবিলম্বে আদালত আবার কারাগারে নিক্ষেপ করে। কারণ তিনি যেভাবে জেলের সামনে বক্তৃতা দিয়েছেন, তাতে তার সুস্থতা বোঝা যাচ্ছে। তাকে তো এটা মানতে হবে যে এটা ওনার মামার বাড়ি নয় উনি হেঁটে হেঁটে এসে এখানে ভর্তি হন নি, উনি জেলে গিয়েছিলেন সেখানে উনি অসুস্থ বলেছিলেন মানে ভান করেছিলেন তারপর ওনাকে জেল এখানে পাঠিয়েছে চিকিৎসার জন্য। এখন ওটা হোটেল নয় যে তিনি ছেড়ে দিতে বললেই সেটা শোনা হবে। নিয়মটা তো মানতে হবে।”