নিজস্ব প্রতিবেদন : সম্প্রতি কসবা কাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেব মিথ্যার ফুলঝুরি ছিলেন তা বলার অবকাশ নেই। এমনকি তিনি তার পরিচয় থেকে একাধিক তথ্য লুকিয়ে রেখেছিলেন বাবা মায়ের কাছেও। যদিও গত বছরই তার নামে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল থানায়। তবে সেই যাত্রায় তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। আর এই বেঁচে যাওয়ার পরেই আরও বেশি করে নিজের জাল বিছাতে শুরু করেন দেবাঞ্জন।
গতবছর দেবাঞ্জন দেবের নামে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তবে কেবলমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের পর এই তাকে সেই সময় ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে তখন তার উপর নজরদারি চালানোর জন্য জানিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার। তবে সম্প্রতি দেবাঞ্জন পুরোপুরিভাবে পুলিশের জালে আসার পর তদন্ত যত এগোচ্ছে ততোই বেরিয়ে আসছে একের পর এক রহস্য।
পুলিশ জানতে পেরেছে, মাসে ৭৭ হাজার টাকার বেতন সহ যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার জাল স্যালারি স্লিপ তৈরি করেছিলেন তিনি। আর সেই স্লিপ দেখিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে ২০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। আর সেই ব্যক্তিগত ঋণ তিনি শোধ করেন নি। কসবায় আইএএস অফিসার, পুরকর্তার জাল পরিচয় দেখিয়ে মাসে ৬৫০০০ টাকা ভাড়া দিয়ে তিন বছরের জন্য পুরসভার নাম করে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন।
কসবায় যে বাড়িটি দেবাঞ্জন ভাড়া নিয়েছিলেন সেই বাড়িতেই রয়েছে এলআইসি অফিস। দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তার অফিসের কর্মচারীরা ওই এলআইসি অফিসের কর্মচারীদের রীতিমতো হম্বিতম্বি দেখাতেন।
ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ না করেও বাড়িতে বাবা মায়ের কাছে তিনি নিজেকে আইএএস অফিসার হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। পরিচয় লুকিয়ে রেখে বাড়িতে এমন হাবভাব দেখাতেন যে বাড়ির লোকজনেরও তেমনটা কিছু সন্দেহ হয় নি। বাড়ির বাইরে নেমপ্লেটও তৈরি করা হয়েছিল সেই রকম। তবে গতবছর যখন পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায় তখন গোটা বিষয়টি জানতে পারেন তার বাবা-মা। কিন্তু লোকলজ্জার খাতিরে এতদিন চুপচাপ ছিলেন।