নিজস্ব প্রতিবেদন : সিকিমে রেল পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ২০০৯ সালে সেবক রংপো রেল প্রকল্পের (Sevoke Rangpo Railway Project) শিলান্যাস হয়েছিল। এরপর ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয় কাজ। দ্রুত গতিতেই চলছিল এই রেল প্রকল্পের কাজ। ইতিমধ্যেই এই রেল প্রকল্পের জন্য যে সকল টানেল এবং সেতু তৈরি করার প্রয়োজন ছিল তা রেলের তরফ থেকে তৈরি করার জন্য তৎপরতার সঙ্গে কাজ চালানো হচ্ছিল। এই সকল টানেল এবং সেতু নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের মুখে ছিল বলে জানা গিয়েছে রেল সূত্রে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৪ সালেই পরিষেবা শুরু হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
কিন্তু সম্প্রতি সিকিমে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যা (Sikkim Flood) সবকিছু ওলট-পালট করে দিয়েছে। মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি আর লোনাক লেক থেকে ভেসে আসা জল ভাসিয়ে দিয়েছে সিকিমকে। বিধ্বংসী এই বন্যায় ইতিমধ্যেই বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে এবং তার সঙ্গে সঙ্গে একপ্রকার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই বিপর্যয় এসে পড়েছে সেবক রংপো রেল প্রকল্পের উপরেও। এর ফলেই সংশয় তৈরি হয়েছে আদৌ নির্ধারিত সময়ে এই রেল পরিষেবা শুরু করা যাবে কিনা তা নিয়ে।
কেননা উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিধ্বংসী এই বন্যায় সেবক রংপো রেল প্রকল্পের ৫ নম্বর টানেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানেলটির প্রায় ৩০০ মিটার ছাদ ভেঙ্গে পড়েছে। যদিও এই টানেলের ছাদ ভেঙ্গে পড়ার ফলে কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু এই প্রকল্পে এই যে আঘাত নেমে এলো তাতে সঠিক সময়ে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া সংশয় তৈরি করছে। কেননা এই টানেলের সংস্কার করতে গেলে অনেক সময় লাগবে যা এই প্রকল্পের পরিষেবা শুরু হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
জানা গিয়েছে, বিধ্বংসী এই বন্যার সময় এই রেল প্রকল্পের কাজের পাঁচ নম্বর টানেলের কাজ চলছিল। সেই সময় অবশ্য শ্রমিকরা টানেলের বাইরে কাজ করছিলেন। এরই মধ্যে হঠাৎ বিপর্যয় নেমে আসে। শ্রমিকরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন মূলত টানেলের বাইরে থাকার কারণেই। যদি তারা টানেলের মধ্যে থাকতেন তাহলে প্রাণ নিয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হতে হত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যার প্রভাব এই টানেলের ওপর সরাসরি না পড়লেও লোহাপুর এলাকায় গত কয়েকদিনে ব্যাপক বৃষ্টি হয় এবং সেই বৃষ্টির কারণেই টানেলটির ছাদের একাংশ ভেঙে পড়েছে। টানেলটির ছাদের একাংশ এইভাবে ভেঙ্গে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি প্রশ্ন উঠছে আর সেটি হল কাজের গুণগত মান নিয়ে। যদিও রেলের তরফ থেকে এই ঘটনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং টানেলের একাংশ ভেঙে পড়ার কারণ জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে এই রেল প্রজেক্টের কাজ সঠিক সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিলেও রেলের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি যে তা আদৌ সময়ে শেষ করা যাবে নাকি কাজের ক্ষেত্রে বিলম্ব হবে।